প্রাসঙ্গিক কথা


সকলপ্রশংসা মহান আল্লাহ পাকের জন্য এবং দরুদ ও সালাম মহানবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা.-এর উপর।
বনী আদমের আবাসভূমির পুরোটাতেই যখন বিরাজ করছিল গোমরাহীর অন্ধকার, তখন আল্লাহ তাআ’লা অন্ধকারাচ্ছনড়ব এ ধরায় হেদায়তের আলো বিকিরণে এখানকার মধ্যাকাশে প্রেরণ করেন সর্বাধিক আলোকময় নূরের রবি রহমতে-আলম হযরত মুহাম্মদ সা. কে।
বিশ্বময় হেদায়তের আলো ছড়িয়ে নূরের এ মহান রবির অস্তাচলে যাওয়ার সন্ধিক্ষণে বিদায় হজ্বে আরাফার ময়দানে সমবেত হলেন তাঁরই পরশে ধন্য হেদায়তের আলোকবর্তিকা লক্ষাধিক সাহাবায়ে কেরাম। ময়দানজুড়ে পিনপতন নীরবতা, আখেরী নবীর নসীহতসমূহ শুনতে সবাই উৎকর্ণ। রহমতে দু’আলম তাঁর নিজ হাতে গড়া সোনালী মানুষদের এ বিশাল সমাবেশে অন্যান্য নসীহতের সাথে এ ঘোষণাও দিয়েছিলেন: “তোমাদের মধ্যে যারা উপস্থিত তারা অনুপস্থিতদের নিকট আমার বাণী পৌঁছে দেবে”।
প্রিয় নবীর এ বাণী অক্ষরে অক্ষরে তা’মীল করলেন নবীর রঙ্গে রঙ্গিন এ সোনালী কাফেলা। দ্বীনের দাওয়াতে বাড়ি-ঘর ছেড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিনড়ব পৃথিবীর বন্ধুর পথসমূহ অতিμম করে হেরার আলো পৌঁছে দিলেন সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তামাম জাহানের আনাচে-কানাচে। সেই ধারাবাহিকতায় সাত শতাব্দী পূর্বে গৌড় গোবিন্দের অপদখলীয় সিলেটে পদার্পণ করেন নববী আলোয় আলোকিত হযরত শাহজালাল মুজাররদে ইয়ামনী রহ.। তাঁর আগমনে ধন্য হয় সিলেটভূমি, মদীনার নূরে নূরানিড়বত হয় রাম-কৃষ্ণ কালিমায় আচ্ছাদিত এ জমিন।

জামেয়ার প্রতিষ্ঠা


জগদ্বিখ্যাত ওলি হযরত শাহজালাল মুজাররদে ইয়ামনী রহ.-এর শয়নকক্ষের পাশেই অবস্থিত এক বিশাল মসজিদ, যা দরগাহ মসজিদ নামে খ্যাত। এই মসজিদে ১৯৪৭ খ্রীষ্টাব্দে ইমাম নিযুক্ত হন দারুল উলূম দেওবন্দের কৃতিসন্তান, সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলাস্থ মাটিজুরা নিবাসী, দুনিয়াবিমুখ এক মহান ব্যক্তিত্ব আরিফ বিল্লাহ হযরত মাওলানা হাফিজ আকবর আলী রহ.। পরশ পাথরের ছোঁয়ায় লোহা স্বর্ণ হয়ে যায়, আর পাথর পরিণত হয় ডায়মন্ডে। তেমনি বিশ্বখ্যাত আলিমে দ্বীন হযরত মাদানী, ক্বারী তৈয়্যব, মুফতি মুহাম্মদ শফী প্রমুখ বুযুর্গানে দ্বীনের পরশে সোনার মানুষে পরিণত হয়েছিলেন মাটিজুরার এই মাটির মানুষ। স্বীয় উস্তাদ তদানীন্তন পাকিস্তানের মুফতিয়ে আ’জম হযরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ শফী রহ.-এর ইশারায় এই মহান ব্যক্তিত্ব ১৩৮১ হিজরী সনের জুমাদাল উলার ২৭ তারিখে দরগাহ মসজিদের পাশেই গড়ে তোলেন ওলি-আউলিয়া তৈরির একটি কারখানা বক্ষমান “জামেয়া ক্বাসিমুল উলুম দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট”। দ্বীনে নববীর এ কাননটি রোপনে নিজের জান-মাল উৎসর্গ করে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন আল্লাহ তায়া’লার অনেক মেহেরবান দরাজদিল বান্দা, তন্মধ্যে সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল জনাব মাওলানা আরশাদ আলী ও দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট-এর মুতাওয়াল্লী সরে কওম এ জেড আব্দুল্লাহ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

জামেয়ার ক্রমবিকাশ


দ্বীনের এ দরসগাহটি সূচনাতে প্রাথমিক স্তর ও হিফজখানা সম্বলিত ছিল বিধায় এর নামকরণ করা হয় “মাদরাসায়ে তা’লীমুল ক্বোরআন”।
আলহামদুলিল্লাহ! খালিছ লিওয়াজহিল্লায় প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি শত প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে জন্মের মাত্র চৌদ্দ বছরে ১৩৯৫ হিজরী সনে চূড়ান্ত সোপানে পৌঁছে যায়। খোলা হয় মারহালায়ে তাকমীল তথা টাইটেল ক্লাস। আর তখন থেকে তা “মাদরাসায়ে ক্বাসিমুল উলূম” নামে আত্মপ্রকাশ করে। এর কিছুকাল পর আরববিশ্বের সাথে সমতা বিধানে মাদরাসা শব্দের পরিবর্তে “জামেয়া” শব্দ সংযোজন করতঃ “জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ.” নামকরণ করা হয়।

জামেয়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল মুজাররদে ইয়ামনী রহ.-এর পরশে ধন্য, বাংলার আধ্যাত্মিক রাজধানী সিলেটে প্রতিষ্ঠিত এ জামেয়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যাবলীর মধ্যে রয়েছে:
১. মুসলিম সন্তানদের প্রকৃত মুসলমান হিসেবে গড়ে তুলতে দ্বীনী ইলমসমূহ শিক্ষা প্রদান এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইসলামী চেতনার প্রসার।
২. মুসলিম সমাজে আপতিত সমস্যাবলির ক্বোরআন-সুনড়বাহ ভিত্তিক সমাধান।
৩. যুগ চাহিদার আলোকে জামেয়ায় অধ্যয়নকারী ছাত্রদের আরবী, বাংলা, উর্দূ, ফার্সী ও ইংরেজী ভাষায় বাক্যালাপ ও লিখনে পারদর্শী করে তোলা।
৪. সর্ব সাধারণের দোরগোড়ায় দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া এবং ক্বোরআন-সুনড়বাহর আলোকে জটিল ও কঠিন মাসআলাসমূহের সমাধান প্রদান।
৫. ধর্মীয় ও জাগতিক গুরুত্বপূর্ণ কিতাবাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা, যাতে অনুসন্ধানী ইলম পিপাসু ছাত্র-শিক্ষকগণ উপকৃত হতে পারেন।
৬. ইসলাম ও মুসলিম মিল্লাতের হেফাযত-কল্পে সিসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় বিদ্বেষী মহলের মোকাবেলায় রুখে দাঁড়ানো।

 

পরিচালনা পর্ষদ


জামেয়ার সার্বিক কার্যμম সুচারুরূপে পরিচালনার নিমিত্তে দু’টি কমিটি রয়েছে: ১. মজলিসে শুরা (ম্যানেজিং কমিটি)। ২. মজলিসে আমেলা (কার্যনির্বাহী কমিটি)।
জামেয়ার ছাত্রাবাস:
জামেয়ার রয়েছে একাধিক বিল্ডিং-বিশিষ্ট ছাত্রাবাস। যাতে বর্তমানে সাড়ে সাত শত আবাসিক ছাত্র অবস্থান করে।তাদের থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা খরচ, জামা-কাপড় ও অধ্যয়নের কিতাবাদিসহ যাবতীয় ব্যয়ভার জামেয়া বহন করে থাকে। লিল্লাহ বোর্ডিং-এ অবস্থানরত ছাত্র ছাড়াও আরো তিন শতাধিক ছাত্র এ জামেয়ায় শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।

হিসাব বিভাগ


জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে। তাই এর নিয়মিত স্থায়ী কোন আয়ের উৎস নেই। একমাত্র আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ও দ্বীনদরদী মুসলিম জনসাধারণের দান-খয়রাতের মাধ্যমেই তা চলে আসছে। জামেয়ার দু’টি ফান্ড রয়েছে: ১. সাধারণ ফান্ড ২. লিল্লাহ বোডিং ফান্ড।
জনসাধারণের স্বেচ্ছায় দানকৃত দান-খয়রাতের টাকা সাধারণ ফান্ডে জমা হয় এবং তা শিক্ষক কর্মচারীগণের বেতন-ভাতা, বিল্ডিং নির্মাণ, কিতাব μয় ও অফিস খরচ ইত্যাদি খাতে ব্যয় করা হয়। লিল্লাহ বোর্ডিং ফান্ডের কোনো পয়সা এ খাতে ব্যয় করা হয় না। যাকাত, ফিতরা, কাফ্ফারা, মানড়বত ও ক্বোরবানীর চামড়ার মূল্য ইত্যাদি লিল্লাহ বোর্ডিং ফান্ডে জমা হয় এবং তা এতীম-মিসকিন ও গরীব ছাত্রদের থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা খরচ, পোষাক, মাসিক ওজিফা ইত্যাদি খাতে ব্যয় করা হয়।
জামেয়ার আয়-ব্যয়ের হিসাবসমূহ সার্বক্ষণিক যথাμমে রসিদ ও ভাউচারের মাধ্যমে অত্যন্ত সতর্কতার সহিত সংরক্ষণ করা হয়।
বৎসরান্তে সরকার অনুমোদিত অডিট টিমের মাধ্যমে তা নিরীক্ষণ করানোর পর মজলিসে শুরায় অডিট প্রতিবেদন পেশ করা হয়।
জামেয়ার ফারেগীন শিক্ষা সমাপনকারী:
এ জামেয়া তার সূচনালগড়ব থেকেই প্রতিবছর আসহাবে সুফ্ফারআদলে গড়ে তুলছে নববী রঙ্গে রঙ্গিন একঝাঁক সোনালী কাফেলা। যারা বিশ্বের বিভিনড়ব দেশে ওয়াজ-নসীহত, লেখনী, বক্তৃতা, শিক্ষকতাসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে বিভিনড়বভাবে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।

জামেয়া ক্বাসিমুল উলূমের শিক্ষা ব্যবস্থা ৫টি স্তরে বিভক্ত:


১. মারহালায়ে ইবতেদাইয়্যাহ (প্রথমিক স্তর):

৫ বছর মেয়াদী এ স্তরে মুসলিম শিশুদের তাজবীদসহ সহীহ শুদ্ধভাবে ক্বোরআন মাজীদ শিক্ষাদান, দ্বীনের মৌলিক নীতি ও বিধিবিধানসহ যুগ-চাহিদার প্রেক্ষাপটে মাতৃভাষা লিখন ও পঠন এবং প্রারম্ভিক ইংরেজি, অংক, উর্দূ, ভ‚গোল, সমাজ ও বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে শিক্ষা দেয়া হয়ে থাকে।

২. মারহালায়ে মুতাওয়াসসিতাহ (নিম্ন মাধ্যমিক স্তর):

৪ বছর মেয়াদী এ স্তরে আরবী ব্যাকরণ তথা নাহু-ছরফের উচ্চ স্তরের কিতাবাদি, আরবী অলংকার শাস্ত্র তথা ইলমে বালাগাত, উচ্চমানের আরবী সাহিত্য, ইলমে মানতেক, ইলমে ফেক্বাহ ও এর মূলনীতি তথা উসূলে ফেক্বাহ, সংক্ষিপ্ত তাফসীর, ফারায়েজ শাস্ত্র ও ইসলামী ইতিহাস ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

৩. মারহালায়ে ছানাবিয়া (উচ্চ মাধ্যমিক স্তর):

৩ বছর মেয়াদি এ স্তরে আরবী ব্যাকরণ তথা নাহু-সরফের উচ্চ স্তরের কিতাবাদি, আরবী অলংকার শাস্ত্র তথা ইলমে বালাগাত, উচ্চমানের আরবী সাহিত্য, ইলমে মানতেক, ইলমে ফেক্বাহ ও এর মূলনীতি তথা উসূলে ফেক্বাহ, সংক্ষিপ্ত তাফসীর, ফরায়েজ শাস্ত্র ও ইসলামী ইতহাস ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

৪. মারহালায়ে ফযীলত (স্নাতক স্তর):

২ বছর মেয়াদী উক্ত স্তরে ইলমে তাফসীর, ইলমে হাদীস, ইলমে ফেক্বাহ ও আরবী সাহিত্যের উঁচু স্তরের কিতাবাদী এবং ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ফালসাফা ও ইলমে কালাম বা আকাইদ শাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ের উপর পাঠদান করা হয়।

৫. মারহালায়ে তাকমীল (স্নাতকোত্তর):

পুরো একটি বছর দিবারাত ক্লাস গ্রহণের মাধ্যমে ইলমে হাদীসের সিহাহ সিত্তা তথা বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ সহ শামায়েলে তিরমিযী, মুয়াত্তায়ে ইমাম মালিক, মুয়াত্তায়ে ইমাম মুহাম্মদ এর মত গুরুত্বপূর্ণ কিতাবগুলোর পাঠদান করা হয়।

তাখাস্সুস ফিল ফিক্বাহ ওয়াল ইফতা:

মারহালায়ে ছানাবিয়া ও মারহালায়ে ফযীলতে মেধাতালিকায় এবং মারহালায়ে তাকমীল তথা টাইটেল ক্লাসে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ যেসব ছাত্র উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চায়, তাদের জন্য এ জামেয়া ১৪১৬ হিজরী সন থেকে চালু করেছে দুই বছর মেয়াদী এক গবেষণা-কোর্স। যার নাম “তাখাস্সুস ফিল ফিক্বহ ওয়াল ইফতা”। এ কোর্সে অধ্যয়নরত ছাত্রদেরকে সমকালীন সমস্যাসমূহের ক্বোরআন-সুনড়বাহ ভিত্তিক ফতওয়া প্রদানে যোগ্য করে গড়ে তোলা হয়।

জামেয়ার ছাত্রাবাস


জামেয়ার রয়েছে একাধিক বিল্ডিং বিশিষ্ট ছাত্রাবাস। যাতে বর্তমানে সাড়ে সাত শত আবাসিক ছাত্র অবস্থান করে। তাদের থাকা-খাওয়া, চিকিৎসা খরচ, জামা-কাপড় ও অধ্যয়নের কিতাবাদিসহ যাবতীয় ব্যয়ভার জামেয়া বহন করে থাকে। লিল্লাহ বোর্ডিং-এ অবস্থানরত ছাত্র ছাড়াও আরো তিন শতাধিক ছাত্র এ জামেয়ায় শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।

শিক্ষকমণ্ডলী ও কর্মচারী বৃন্দ:


বর্তমানে জামেয়ায় ৩৪ জন দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক এবং ২৬ জন কর্মচারী রয়েছেন।

জামেয়া গ্রন্থাগার


জামেয়া ক্বাসিমুল উলূমের রয়েছে একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থাগার। যাতে বর্তমানে পনের হাজারেরও বেশি কিতাব রয়েছে। পৃথিবীর অনেক দুষ্প্রাপ্য কিতাবাদির এ বিশাল খাজানার ইসলামী ও যুগোপযোগী গ্রন্থাবলির মাধ্যমে ইল্ম আহরণকারী জ্ঞান-পিপাসুদের অন্তরাত্মা প্রশান্তি পায়।

জামেয়ার ফারেগীন

এ জামেয়া তার সূচনালগ্ন থেকেই প্রতি বছর আসহাবে সুফ্‌ফার আদলে গড়ে তুলছে নববী রঙ্গে রঙ্গিন এক ঝাঁক সোনালী কাফেলা। যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওয়াজ-নসীহত, লেখনী, বক্তৃতা, শিক্ষকতাসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে বিভিন্নভাবে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।

জামেয়ার ভবিষ্যত পরিকল্পনা:

এ জামেয়া ইতঃমধ্যেই দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জামেয়ার এ অবস্থানকে গতিময় করতে জামেয়া কর্তৃপক্ষ নিম্নোক্ত পরিকল্পনা সমূহ হাতে নিয়েছে:

১. পৃথক ক্বিরাআত ও তাজবীদ বিভাগ চালু করা।

২. হাদীস শাস্ত্রের উপর বিশদ গবেষণার নিমিত্তে তাখাস্‌সুস ফিল হাদীস বিভাগ চালু করা।

৩. পবিত্র ক্বোরআন মজীদ নিয়ে গবেষণা কল্পে তাখাস্‌সুস ফি উলূমুল ক্বোরআন বিভাগ চালু করা।

৪. আরবী ভাষার উপর গভীর জ্ঞানার্জনের নিমিত্তে আরবী আদব (সাহিত্য) বিভাগ চালু করা।

এ সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আরো অনেক গবেষণামূলক কিতাবাদি, প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি, স্বতন্ত্র গবেষণাগার নির্মাণ একান্ত আবশ্যক।


জামেয়ার অন্যান্য কার্যক্রম


১. তাখাস্‌সুস ফিল ফিক্বাহ ওয়াল ইফতা:

মারহালায়ে ছানাবিয়া ও মারহালায়ে ফযীলতে মেধা-তালিকায় এবং মারহালায়ে তাকমীল তথা টাইটেল ক্লাসে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ যে সব ছাত্র উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চায় তাদের জন্য এ জামেয়া ১৪১৬ হিজরী সন থেকে চালু করেছে দুই বছর মেয়াদি এক গবেষণা কোর্স। যার নাম তাখাস্‌সুস ফিল ফিক্বাহ ওয়াল ইফতা। এ কোর্সে অধ্যয়নরত ছাত্রদেরকে সমকালীন সমস্যা সমূহের ক্বোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ফতওয়া প্রদানে যোগ্য করে গড়ে তোলা হয়।

২. হিফজ বিভাগ:

জামেয়া তার সূচনালগ্ন থেকেই ছাত্রদেরকে সহীহ শুদ্ধভাবে ক্বোরআন মজীদ শিক্ষা দেয়ার পাশা-পাশি পৃথক হিফজ শাখার মাধ্যমে হাফিজ বানানোর উপরও গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বিগত ১৩১৩ হিজরী থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সংলগ্ন ধূপাগুলে দুইজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে একটি স্বতন্ত্র হিফজ শাখা ও চালু রয়েছে।

৩. প্রাতঃকালীন মক্তব:

জামেয়া তার সূচনা লগ্ন হতেই পাড়া-প্রতিবেশী কোমলমতি মুসলিম শিশুদের দ্বীনী শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে আসছে। সে লক্ষ্যে প্রাতঃকালীন মক্তব চালু করে দু’জন অভিজ্ঞ শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিশুদের কালিমা, মাসনুন দুআ’ সমূহ, ওজু, তায়াম্মুম ও নামাজ ইত্যাদি নিয়ামাবলি এবং সহীহ শুদ্ধভাবে কায়দা, ছিপারা ও ক্বোরআন মজীদ শিক্ষাদানের ব্যবস্থা রেখেছে।

৪. দাওয়াত ও তাবলীগ:

দাওয়াত ও তাবলীগ দ্বীন ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিততের ছাড়াও জন সাধারণের দোর গোড়ায় সহজেই ইসলামের বানী পৌঁছে দেয়া যায়। আলহামদু লিল্লাহ! এ ক্ষেত্রে জামেয়ার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। জামেয়ার শিক্ষকবৃন্দ ও পূর্ণ যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জামে মসজিদ ও দ্বীনী মজলিসে দ্বীন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করে থাকেন।

শেষ কথা


একমাত্র তাওয়াক্কুল আলাল্লাহ-ই জামেয়ার মূল সম্বল। আল্লাহর রহমতে জামেয়া তার এ বিশাল ব্যয়ভার দ্বীন-দরদী মুসলিম মিল্লাতের দান-খয়রাতের মাধ্যমেই বহন করে আসছে। এর স্থায়ী কোন আয়ের উৎস নেই। নেই কোন সরকারী বরাদ্ধকৃত তহবিলও। আলহামদু লিল্লাহ! এতদসত্ত্বেও জামেয়া দিন দিন তার লক্ষ্যপানে জোর কদমে এগিয়ে যাচ্ছে।

আকুল আবেদন

দ্বীনদরদী মুসলিম ভাই ও বোনেরা!
এ জামেয়া শুরু থেকেই আপনাদের দান-খয়রাতের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। আলহামদুলিল্লাহ!আপনাদের এ জামেয়ার লেখাপড়ার মান উনড়বত হওয়ায় আবহমান বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে এর সুনাম-সুখ্যাতি। কুতবে আলম শায়খুল ইসলাম হযরত মাদানী রহ. কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বাংলার প্রাচীনতম দ্বীনী শিক্ষাবোর্ড “আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশ” এর শীর্ষ স্থানটি দখল করে আছে আপনাদের প্রাণপ্রিয়এ জামেয়া। যদ্দরুন প্রতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতে জ্ঞান-পিপাসুদের উপচেপড়া ভীড়ে স্থান সংকুলান হয় না এর ছাত্রাবাস ও শ্রেণীকক্ষসমূহে। ছাত্রাবাস ও শ্রেণীকক্ষ সংকটের দরুন প্রতিবৎসর বাধ্য হয়েই প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভর্তিচ্ছু ছাত্রকে ফেরত দিতে হয়। সম্পূর্ণ অবৈতনিক এ জামেয়ায় অবস্থানরত এতীম, গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের থাকা-খাওয়া, জামা-কাপড়, চিকিৎসা, কিতাবাদী ছাড়াও মাসিক ওজিফা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে লিল্লাহ বোর্ডিং ফান্ড হতে। তাই দ্বীনদরদী মুসলিম ভাই-বোনদের প্রতি আকুল আবেদন যে, অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও জামেয়ার প্রতি আপনাদের দান-খয়রাতের হাত সম্প্রসারিত করে সাদাকায়ে জারিয়ার অফুরন্ত সাওয়াবে অংশগ্রহণ করবেন।
আল্লাহ তাআ’লা আপনাদের দান কবুল করুন এবং দিনদিন জামেয়ার উনড়বতি দান করুন। আমীন।

সালামান্তে
মুফতি মুহিব্বুল হক
মুহতামিম,জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম
দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট, বাংলাদেশ।
ফোন: ০২৯৯৬৬৩৪৭০৮

জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট, বাংলাদেশ
-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
প্রতিষ্ঠা: ২৭-০৫-১৩৮১ হিজরী, ০৭-১১-১৯৬১ ঈসায়ী।
প্রতিষ্ঠাতা:
আরিফ বিল্লাহ হযরত মাওলানা হাফিয আকবর আলী রহ.
যোগাযোগ:
মুহতামিম, জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট, বাংলাদেশ।
ফোন: ০২৯৯৬৬৩৪৭০৮ মোবাইল ও বিকাশ: ০১৭৫৮ ৯৩৮৭৮০

ব্যাংক হিসাব:
জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম দরগাহে হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট
পূবালী ব্যাংক লি: দরগাহ গেইট শাখা, সিলেট।
চলতি হিসাব নং: ১৪১৪৯০১০০০৬০০
জেনারেল ফান্ড দরগাহ মাদরাসা
চলতি হিসাব নং: ৩১১৫৩১৬০০৯৮৭১
লিল্লাহ বোর্ডিং ফান্ড দরগাহ মাদরাসা
চলতি হিসাব নং: ৩১১৫৩১১০০৯৮৩৫
প্রাইম ব্যাংক. আম্বরখানা শাখা সিলেট।
জামেয়ার প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ থেকে প্রকাশিত।

Jamea Qasimul Uloom Dargah E Hajrat ShahJalal (R). Sylhet

Scroll to Top